কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়? সেরা ৫টি উপায় (Kon Jaygay gele manoshik shanti pawoa jay)
জীবনে সুখ সমৃদ্ধি পেতে হলে শান্তি পাওয়াটা প্রথম শর্ত। সুতরাং কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় সেবিষয়েই আজকে আমাদের ফিচারপোষ্টের বিশেষ আয়োজন। চলুন সেরা ৫ উপায়ে মানসিকভাবে শান্তি ও সুখ পাবেন কিভাবে সে সম্পর্কে জানা যাক।
কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়?
মানুষ মাত্রই আমরা প্রত্যেকেই কমবেশি সুখ এবং সমৃদ্ধির পাশাপাশি শান্তি চাই। তবে যদি আপনি সত্যিকার অর্থেই অন্তরের গহীন থেকে মানসিকভাবে শান্তি পেতে চান তাহলে আপনার জন্য প্রথম শর্ত একজন মুসলমান হিসেবে নামাজ পড়বেন। কারণ নামাজের মাধ্যমে অনেক প্রকারের মানসিক শান্তি পাওয়া যায় তার পাশাপাশি চিকিৎসা বিজ্ঞান অনুযায়ী শারীরিকভাবে ও সুস্থ থাকা সম্ভব।
কোথায় গেলে শান্তি পাওয়া যায় বা এমন কোন জায়গা আছে কিনা যেখানে গেলে হৃদয় কোমলতায় ছুঁয়ে যাবে এবং অন্তরে শান্তি অনুভব হবে। তাহলে তাদের জন্যই মূলত বলছি যে আপনি এমন একটি জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাবেন, যেখানে যে কোন ধর্মের যে কোন ব্যক্তি নিজের মতো করে শান্তি অনুভব করতে পারবে।
সুতরাং কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় সেই স্থানটি হল কবরস্থান। অর্থাৎ আপনি যদি কবরস্থানে গিয়ে নিরিবিলি ভাবে অনেকক্ষণ তাকিয়ে থাকেন এবং মনোযোগ সহকারে নিশ্চুপ অবস্থায় দাঁড়িয়ে থাকেন তাহলে আপনার মনে অনেক রকমের চিন্তা মুক্ত ও বিশুদ্ধতার কারণে অনেক ভালো লাগবে। এবং আপনি মানসিকভাবে খুব স্বাচ্ছন্দে শান্তি পাবেন।
মানসিকভাবে শান্তি পাওয়ার উপায়
অর্থ-সম্পদ, টাকা-পয়সা কিংবা পয়সা কারীর মাধ্যমে সকল সুখ পৃথিবীতে কিনতে পাওয়া যায় না। কারণ অনেকেই বলে থাকেন টাকা দিয়ে সুখ কিনা সম্ভব নয়, অবশ্যই এই উক্তিটি অনেকাংশেই সত্য। তবে আপনি যদি হালাল উপায়ে উপার্জন করেন তাহলে সেই রোজগার ভোগ করার মাধ্যমে আপনি মানসিকভাবে শান্তি পাবেন।
যেকোনো জায়গায় গেলে মানসিকভাবে শান্তি পাওয়ার উপায়
জীবন প্রক্রিয়ার জন্য এবং জীবিকা উপার্জনের তাগিদে আমরা প্রতিনিয়ত একই স্থান থেকে অন্য স্থানে ভ্রমণ করে থাকি। রুটি রোজগারের দায়ে হয়তোবা আমরা এক অঞ্চল থেকে অন্য অঞ্চলে পরিভ্রমণে ব্যস্ত থাকি। আর এই ব্যস্ততার মধ্যে অনেক সময় আমাদের মানসিক চাপ ও টেনশন গুলো মাথা খেয়ে দেওয়ার মত করে অবস্থা হয় এবং আমাদের অনেক অশান্তি লাগে।
তবে যদি আপনি যে কোন জায়গায় গেলে মানসিকভাবে শান্তি পেতে চান, তাহলে বিশ্বাস নামক শব্দটিকে নিজের মধ্যে ভাবে জড়িয়ে নিন। অর্থাৎ প্রথমে আপনাকে সব সময়ের জন্য মহান আল্লাহ তায়ালার উপরে বিশ্বাস স্থাপন করে তার প্রতি ভরসা রাখতে হবে। এবং বিপদ আপদ আয় উন্নতি অথবা ব্যর্থতা ও সফলতা সকল ক্ষেত্রেই মহান আল্লাহতালার উপর ভরসা রেখে শুকরিয়া আদায় করতে হবে এবং একমাত্র তার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে।
এবং মানসিকভাবে শান্তি পাওয়ার জন্য পৃথিবীতে অন্যতম আরেকটি উপায় হল নিজের প্রিয় সঙ্গীতির কাছ থেকে মানসিকভাবে সুখ ও শান্তি পাওয়া। অর্থাৎ আপনার প্রিয় সঙ্গী বা সঙ্গিনীর সাথে যদি আপনার বিশ্বাস ও ভালোবাসার কোনো কমতি না থাকে তাহলে আপনি যে কোন জায়গায় গিয়ে যে কোন কর্মব্যস্ততার মধ্যেও সব সময় মানসিকভাবে একটা সুপ্ত সুখ ও ভালবাসার স্বাচ্ছন্দ অনুভব করবেন। সুতরাং মানসিকভাবে শান্তি পাওয়ার অন্যতম উপায় হচ্ছে আপনার প্রিয়তমার সাথে আপনার ভাব ভালোবাসার সুন্দর আদান প্রদান হওয়া।
যেকোনো সময় মানসিক শান্তি পাবো কিভাবে
জীবন চলার পথে আমাদের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ হয়ে থাকে। হয়তোবা ভালো মানুষের পাশাপাশি এমন কিছু কোটি মানুষের রয়েছে যাদের কটু কথার মাধ্যমে আপনি হুটহাট করে মানসিকভাবে আঘাত পেতে পারেন। অথবা তাদের ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার অন্তরে কষ্ট পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
সুতরাং যেকোনো সময় মানসিক শান্তি পাওয়ার অন্যতম উপায় হল, মানুষজনের সাথে ভালো আচরণ ও সুন্দর ও সততার ব্যবহার করবেন। সর্বদা মহান আল্লাহ ও সৃষ্টিকর্তার প্রতি ভরসা স্থাপন করে হৃদয়ের মধ্যে শুকরিয়া লালন করবেন।
এমনকি যদি আপনাকে কোন কথায় বা মন্দ আচরণের মাধ্যমে আঘাত দিয়ে থাকে, তাহলে সম্ভব হলে প্রথম পর্যায়ে আল্লাহর উপর তার বিচারকে ন্যস্ত করে দিবেন। এবং আঘাতের পরিমাণ যদি বেশি হয় তাহলে শুধুমাত্র কথার মাধ্যমে নয় বরং কাজের মাধ্যমে তার ব্যবহারের উচিত উত্তরটি দিবেন। তাহলে দেখবেন সে হয়তো নিজের তৃতীয়কর্মের জন্য ফল ভোগ করবে আর আপনিও মানসিকভাবে সুন্দর উপায়ে শান্তি অনুভব করবেন।
কোন জায়গায় গেলে মানসিকভাবে শান্তি পাওয়া যায়
মানুষ মাত্রই আমরা এমন কিছু বিষয় রয়েছে যেগুলো আমাদের নিকটেই আছে কিন্তু আমরা সেগুলো খোঁজার জন্য অনেক দূর প্রান্তীয় চলে যায়। অথবা অনেক পদক্ষেপও নিয়ে ফেলি। অর্থাৎ আমি বলতে চাচ্ছি মানসিক শান্তি মূলত আপনার হাতের নাগালেই রয়েছে। আর সেটি হল আপনার একটি সুস্থ ও ভালো মন মানসিকতা।
অর্থাৎ সুস্থ অস্থিমজ্জা ও ভালো মন-মানসিকতার উপস্থিত থাকলে আপনি যেকোনো সময় যে কারো সাথেই চলন ফিরণে শান্তি অনুভব করবেন। হ্যাঁ তবে যদি আপনার বিপরীত পাশের লোকটি কোন মন্দ বা ঘৃণিত হয়ে থাকে, তাহলে এর জন্য কোন এক সময় সে তার প্রতিফল ভোগ করবে। তাই বলে এই নয় যে সে খারাপ বলে আপনিও তার সঙ্গে মন্দ আচরণ করবেন। বরং সর্বদা আল্লাহর উপর ভরসা রেখে আপনি সৎ পথে চলবেন।
নিয়মিত কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায়
আসলে আল্লাহ তাআলার এই অফার সৃষ্টি বিশাল পৃথিবীতে শান্তি খোঁজার জন্য জায়গার কোনো অভাব নেই। যদি এমন হয় কর্মব্যস্ততা বা যে কোন কারণে আপনি মানসিকভাবে অশান্তিতে ভুগছেন, তাহলে চাইলে সুন্দর কোন স্থানে ভ্রমণ করতে পারেন।
অথবা আপনি পছন্দ করেন এমন কিছু খাবার খেয়ে আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করতে পারেন। বা চাইরে আপনি যে কাজটি করতে পছন্দ করেন বা অতীতে যে কাজটি আপনার খুব ভালো লাগতো সেটিকে সেই কাজটি আবারও পুনরাবৃত্তি করতে পারলে, আশা করি আপনি মানসিকভাবে শান্তি পাবেন।
তবে আপনার জন্য আমার পরামর্শ হলো; যদিও দুনিয়াতে অসংখ্য শান্তির জায়গা রয়েছে। তবে আখেরাত বা পরকালের চাইতে ইহকালের এই ছোট্ট ক্ষণিকের সময়ের দুনিয়ায় শান্তির স্থান তুলনামূলক নগণ্য। তাই যদি আপনি শান্তি পেতে চান ধর্মের পথে চলুন, ন্যায় নিষ্ঠার সাথে জীবন যাপন করুন। সৃষ্টিকর্তার আনুগত্য হন। তাহলে দেখবেন আপনার হৃদয়ে অসংখ্য শান্তি অনুভব হবে।
মানসিকভাবে শান্তি পাওয়ার সেরা পাঁচটি উপায়
মানুষ মাত্রই যেহেতু আমরা কমবেশি প্রত্যেকেই মানসিকভাবে শান্তি পেতে চাই। সকল শ্রেণীর মানুষের কথা চিন্তা করি নিম্নে সেরা পাঁচটি মানসিক শান্তি পাওয়ার উপায় উল্লেখ করা হলো।
- সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস ও ভরসা রাখুন।
- প্রাপ্তির মধ্য থেকেও কিছু অপ্রাপ্তিকে মেনে নিন।
- পাছে লোকে কিছু বলে, বলুক সেটা এড়িয়ে চলুন।
- নিয়মিত শরীর চর্চা করুন। ব্যায়ামেই শারীরিক সুফল।
- কোন ভালো ও নেই নিষ্ঠার সাথে সুন্দর ও পছন্দের কাজগুলো করুন।
সৃষ্টিকর্তার প্রতি বিশ্বাস ও ভরসা রাখুনঃ আপনি যেকোনো ধর্মের মানুষ হতে পারেন। তবে অবশ্যই আপনি সৃষ্টিকর্তা তে বিশ্বাস স্থাপন করবেন। এবং একমাত্র আল্লাহর প্রতি ভরসা রেখে জীবনের সামনের চলার পথে এগিয়ে যাবেন।
প্রাপ্তির মধ্য থেকেও কিছু অপ্রাপ্তিকে মেনে নিনঃ ধরণীর বুকে ছোট পরিসরের জীবনের সকল চাওয়ায় পাওয়া হয় না। সেজন্য অল্পে তুষ্টিতা অর্জন করে নেওয়াটাই উত্তম হবে। সুতরাং সকল প্রাপ্তির মধ্য থেকেও কিছু কিছু চাওয়ার পর না পেয়ে থাকলে মন খারাপ করবেন না। বরং প্রাপ্তির মধ্য থেকেও কিছু অপ্রাপ্তি গুলোকে মেনে নিন। দেখবেন! মানসিকভাবে যেকোনো জায়গায় গেলে শান্তি পাবেন।
পাছে লোকে কিছু বলে, বলুক সেটা এড়িয়ে চলুনঃ আপনি ভাল কাজ করবেন সেখানে সবাই শুধুমাত্র আপনাকে বাহবা দিবে এমনটা কিন্তু নয়। বরং আমাদের চারপাশের লোকজনের মধ্যে কিছু মানুষ রয়েছে যারা আপনার পিছনে কিছু কটু কথা বলে বেড়াবে। সুতরাং পাছে লোকে কিছু কথা বলার সে বলুক, সেদিকে কর্ণপাত করবেন না। তিরস্কার ও ভরসনাকে সব সময় এড়িয়ে চলুন। এবং যেটা ঠিক ও সুন্দর সে কাজটি আপনি নিরলস ভাবে করে যান। তাহলে শান্তি আপনার দরজায় এসে কড়া নাড়বে।
নিয়মিত শরীর চর্চা করুন। ব্যায়ামেই শারীরিক সুফলঃ বলা হয়ে থাকে শরীর সুস্থ তো মন সুস্থ। অর্থাৎ শারীরিকভাবে যদি আপনি স্বাচ্ছন্দ বোধ করেন এবং ভালো লাগাটা আপনার ভিতরে অনুভূত হয় তাহলে মানসিকভাবেও আপনি ভিতর থেকে অনেক বেশি ভালো থাকবেন। সুতরাং নিয়মিত শরীর চর্চা করলে ব্যায়ামের মাধ্যমে শারীরিক সফলতার পাশাপাশি মানসিকভাবেও শান্তি পাওয়া যায়।
যেকোন ভালো এবং সুন্দর ও পছন্দের কাজগুলো ন্যায় নিষ্ঠার সাথে সম্পন্ন করুনঃ মানুষ মাত্রই আমরা সাধারণত অলস বদভাসে পতিত। তবে এই অলসতার থেকে মুক্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে অবশ্যই যে কোন ভালো ও সুন্দর কাজগুলোকেই আপনি বেছে নিন। এবং আপনার কাছে যেই ভাল কাজগুলো করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ লাগবে, সেই কাজগুলোকে ন্যায় ও নিষ্ঠার সাথে সুন্দরভাবে সম্পাদন করুন। দেখবেন আপনার কৃতকর্মের মধ্যে যেমন নতুনত্ব ও সৃজনশীলতার আবিষ্কার করতে পারবেন, তেমনি ভাবে আপনার হৃদয়ে আনন্দের ফোয়ারায় প্রস্ফুটিত হবে।
তাই যে কাজগুলো আপনি করতে ভালোবাসেন সেই ভাল কাজগুলোকে নিয়মিত করুন, তাহলে যেকোনো জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়ার ক্ষেত্রে কখনোই অভাব অনুভব করতে হবে না।
পরিশেষে,
সবশেষে আমি আপনাকে বলতে চাই, মন যদি ভালো না থাকে। তাহলে পৃথিবীর সবচাইতে সুন্দরতম কাজটুকু ভালো লাগেনা। আপনার বিপরীত পাশের মানুষটির মুখ থেকে বেরোনো সবচাইতে হৃদয়ের সার্থক কথাটিকেও আপনার পছন্দ হবে না। এমনকি আপনার মনে যদি শান্তি না থাকে, তাহলে পৃথিবীর সবচাইতে সুস্বাদু খাবারও আপনার কাছে কাটা বিষের মতো বিশ্বাস লাগবে।
সুতরাং কোন জায়গায় গেলে মানসিক শান্তি পাওয়া যায় সে সম্পর্কে আশা করি জানতে পেরেছেন। তবে অবশ্যই উপরের যে সেরা পাঁচটি মানসিক শান্তি পাওয়ার উপায় সম্পর্কে বর্ণনা করেছি, সেই টিপস গুলোকে ফলো করলে আপনি অন্তরের গহীন থেকে সুখ-সমৃদ্ধির পাশাপাশি শান্তি ও অনুভব করবেন। আর্টিকেলটি সম্পূর্ণ পড়ার জন্য ধন্যবাদ।